Monday, December 15, 2025

দীঘিনালায় আস্থা গড়তে সামাজিক কার্যক্রমে সেনাবাহিনী



পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি জেলার দুর্গম ও সংবেদনশীল পাহাড়ি এলাকাগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে নিরাপত্তা সংকট, যোগাযোগের দুর্বলতা ও সামাজিক আস্থাহীনতার চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান। এ বাস্তবতায় দীঘিনালার পাহাড়ি অঞ্চলে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে সম্প্রীতি ও পারস্পরিক আস্থা সুদৃঢ় করতে ধারাবাহিক সামাজিক ও মানবিক কার্যক্রম জোরদার করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।


খাগড়াছড়ি ২০৩ পদাতিক ব্রিগেডের আওতাধীন দীঘিনালা সেনা জোনের উদ্যোগে এবং জোন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. ওমর ফারুক পিএসসি-এর নির্দেশনায় ক্যাপ্টেন আবু রায়হানের নেতৃত্বে কবাখালী ইউনিয়নের ডানে কবাখালী, জোড়া ব্রিজ ও ব্যারাকছড়া এলাকার দুর্গম পাহাড়ি জনপদে নিয়মিত এসব কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।


সেনাবাহিনী সূত্র জানায়, পাহাড়ি অঞ্চলে সক্রিয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর অপপ্রচার ও ভয়ভীতির মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে রাষ্ট্রীয় মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন করার অপচেষ্টা দীর্ঘদিনের একটি বাস্তবতা। এসব অপচেষ্টা প্রতিহত করতে শুধু নিরাপত্তা তৎপরতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থেকে স্থানীয় জনগণের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে আস্থা অর্জনকে কৌশলগতভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে সেনাবাহিনী। এর অংশ হিসেবে সেনাসদস্যরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করছেন এবং সরাসরি তাদের সমস্যা ও প্রয়োজন সম্পর্কে অবগত হচ্ছেন।


শীত মৌসুমে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় জীবনযাত্রা আরও কঠিন হয়ে ওঠে। সে বাস্তবতায় শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণকে মানবিক সহায়তার পাশাপাশি জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করার একটি কার্যকর মাধ্যম হিসেবে দেখছে সেনাবাহিনী।


একই সঙ্গে স্থানীয় যুবসমাজকে ইতিবাচক ও গঠনমূলক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত রাখতে খেলাধুলাকে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। ভলিবল ও নেট বিতরণ এবং স্থানীয়দের সঙ্গে প্রীতি ভলিবল ম্যাচ আয়োজনের মাধ্যমে সেনাবাহিনী ও পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মধ্যে পারস্পরিক দূরত্ব কমিয়ে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।


এ ছাড়াও দীঘিনালা সেনা জোনের উদ্যোগে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষা সহায়তা, শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, দুস্থদের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী প্রদান এবং প্রত্যন্ত এলাকায় বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।


এ বিষয়ে দীঘিনালা সেনা জোনের জোন অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. ওমর ফারুক, পিএসসি বলেন,

“পাহাড়ি এলাকায় টেকসই শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা কার্যক্রমের পাশাপাশি জনগণের আস্থা অর্জন অত্যন্ত জরুরি। স্থানীয় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের মৌলিক প্রয়োজন পূরণে সহায়তা করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।”


স্থানীয় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর বাসিন্দারা জানান, দুর্গম এলাকায় সরকারি সেবা পাওয়া কঠিন হলেও সেনাবাহিনীর এসব উদ্যোগ তাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। শিক্ষা সহায়তা ও চিকিৎসাসেবাকে তারা দীর্ঘদিনের ভোগান্তি লাঘবে কার্যকর ভূমিকা হিসেবে দেখছেন।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: